উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায়? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন


প্রিয় পাঠক উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এবং ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আপনারা যদি জানতে চান তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য।

উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায়


কারণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নারী উদ্যোক্তা লোন এবং প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি যাতে করে আপনি একজন সফল উদ্যোক্তা হতে পারেন।

সূচিপত্রঃ উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায়? এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায়

আপনি একজন উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছেন কিন্তু উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এই সম্পর্কে জানেন না যার কারণে আপনি আপনার ব্যবসা শুরু করতে পারছেন না আর তাই আজকের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ আপনার জন্য কারণ আজকের আর্টিকেলে আমরা এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
বাংলাদেশে অনেক মানুষ এবং যুবক রয়েছে যারা পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে দিনের পর দিন বেকার থেকে যাচ্ছে আর তাই এদের কথা চিন্তা করে বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি ব্যাংকেই ব্যবসা করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা লোন দিয়ে থাকে যাতে করে তারা ব্যবসা করে লাভ করে স্বাবলম্বী হয়ে লোনের টাকা শোধ করতে পারে। 

কিন্তু ব্যাংক থেকে ব্যবসা করার জন্য লোন নিতে হলে ব্যাংকের কিছু নিয়মকানুন রয়েছে যেগুলো আপনাকে অবশ্যই মানতে হবে আর এ সকল নিয়ম সম্পর্কে আজকে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব।

১। যে ব্যক্তি লোন নিবে তাকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিকতা থাকতে হবে।

২। এবং আবেদনকারীর অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্র থাকতে হবে।

৩। এছাড়াও আপনার সদ্য তোলা রঙিন ছবি লাগবে কারণ আপনি যখন ব্যাংক থেকে ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করবেন তখন সেখানে এই ছবিটির প্রয়োজন হবে।

৪। এবং আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্সের ফটোকপি থাকতে হবে।

৫। এছাড়া আপনার বাড়ির ইলেকট্রিক বিল, টেলিফোন বিল, ট্যাক্স এর কাগজ ইত্যাদির ফটোকপি থাকতে হবে।

৬। এবং আপনি যে এক জায়গাতে আপনার কোম্পানি অথবা ফ্যাক্টরি স্থাপন করবেন সেখানকার একটি স্টেশনের কাগজ থাকতে হবে।

৭। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেটি সেটি হচ্ছে টাকা লোন নেওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই আপনার সম্পত্তির অংশগুলো দেখাতে হবে সেটি হতে পারে আপনার বাড়ির দলিল অথবা জায়গা জমির দলিল ইত্যাদি।

৮। এছাড়াও ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার আগে ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর কার্যালয় থেকে নাগরিকের সনদ সংগ্রহ করতে হবে।

ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন

উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এ সম্পর্কে উপরের অংশ থেকে পড়ে আমরা অনেকেই জেনে গিয়েছি তাই এবার ইসলামী ব্যাংক উদ্যোক্তা লোন কি বা এটা কিভাবে পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আর্টিকেলের এই অংশে বিস্তারিত আলোচনা করব। 

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি ব্যাংকেই লোন দিয়ে থাকে কিন্তু ইসলামী ব্যাংকে ইসলামিক শরীয়ত অনুযায়ী পরিচালিত হয় তাই এখানে এটিকে লোন বলা হয় না বলা হয় ইনভেসমেন্ট এছাড়াও অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে কিছুটা অন্য প্রক্রিয়ায় এখানে সুদ দেওয়া হয়। 

ইসলামী ব্যাংক থেকে আপনি তিন ধরনের লোন নিতে পারবেন প্রথমটি হচ্ছে বাড়ি করার জন্য, দ্বিতীয়টি হচ্ছে কার ইনস্যুরেন্স এর জন্য, এবং তৃতীয়টি হচ্ছে ব্যবসা করার জন্য। কিন্তু আপনি যেহেতু উদ্যোক্তা হতে চান তাই আপনাকে ইসলামী ব্যাংক থেকে ব্যবসা বা উদ্যোক্তার জন্য যে লোনটি রয়েছে সেটি নিতে হবে। 
আপনি যদি কোন শহর থেকে ইসলামী ব্যাংকে ব্যবসার জন্য লোন নিতে চান তাহলে আপনি সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন নিতে পারবেন এছাড়াও আপনি যদি জেলা পৌরসভা অথবা অন্যান্য অঞ্চলের হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এখান থেকে দুই থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত লোন পাবেন আর এ লোন নেওয়ার জন্য আপনার যা যা প্রয়োজন হবে তা হলঃ
  • আবেদনকারীর অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিকতা ও জাতীয় পরিচয় পএ ও ছবির প্রয়োজন হবে।
  • এবং আপনার ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্সের ডকুমেন্টস প্রয়োজন হবে।
  • এবং আপনার ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে একটি দলিল এর প্রয়োজন হবে।

উদ্যোক্তা ঋণ কি

উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এ সম্পর্কে জানার আগে আপনাদের অবশ্যই উদ্যোক্তার ঋণ কি বা কাকে বলে এ সম্পর্কে জানতে হবে আর এ সম্পর্কেই আজকের আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করব। 

বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ১০০% মানুষের মধ্যে ৫১% মানুষই বেকার আর তাই এর জন্যই বাংলাদেশের প্রায় অনেকগুলো ব্যাংকেই যে কোন রকম ব্যবসা করার জন্য ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে আর এটিকেই উদ্যোক্তা ঋণ বলা হয়। 
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় অনেকগুলো ব্যাংকেই এই ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে যেমন গ্রামীণ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, ইত্যাদি আর যার ফলে মানুষ ধীরে ধীরে এই বেকারত্ব থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে।

নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ পাবেন যেভাবে

বর্তমানে পুরুষ মানুষের মত প্রতিটি নারীও চাই নিজে কিছু করতে বা উদ্যোক্তা হতে কিন্তু পর্যাপ্ত পরিমাণ পুঁজি না থাকাই বা তেমন কোন সহযোগিতা না পাওয়ায় তারা দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে যার কারণে আপনি যদি খেয়াল করেন অনেক নারী বেকার দেখতে পাবেন। 

আর এ সমস্যা দূর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক সহ আরো অন্যান্য ব্যাংকে নারী উদ্যোক্তাদের লোন দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে যাতে করে তারা নিজেরাই কিছু একটা করতে পারে। কিন্তু অনেক নারী রয়েছে যারা এখন পর্যন্ত জানে না যে নারী উদ্যোক্তা ঋণ কিভাবে নিতে হয়। তাই আজকের আর্টিকেল আমরা নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ পাওয়ার সকল উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
১। নারী উদ্যোক্তা ঋণ নেওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে ব্যাংকের কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটি আবেদন ফরম সংগ্রহ করে সেটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।

২। এরপর আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র এবং একটি রঙিন ছবির প্রয়োজন হবে।

৩। এবং আপনার ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ট্রেড লাইসেন্স এবং ভ্যাট সার্টিফিকেট ব্যাংকের কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হবে।

৪। এছাড়া আপনি যদি এমটিবির ভাগ্যবতী লোন নিতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই এক বছর ব্যবসা করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৫। এবং এমটিভির গুণবতী লোন যেটি রয়েছে সেটিও আপনি নিতে পারবেন কিন্তু তার জন্য আপনাকে অবশ্যই উৎপাদন অথবা শিল্পের সাথে জড়িত থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন বাংলাদেশ

উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আপনার ইতিমধ্যে আর্টিকেলের উপরের অংশ থেকে জেনে গেছেন তাই এবার আমরা আর্টিকেলের এই অংশে প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। 

মূলত বাংলাদেশ নতুন উদ্যোক্তাদের অনেক বেশি সুযোগ সৃষ্টি করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী ব্যবসা লোন চালু করা হয়েছে। এছাড়াও যুবকদের উৎপাদন মুখী এবং অর্থনৈতিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে উৎসাহিত করাই হচ্ছে এ প্রতিষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য। 
প্রধানমন্ত্রীর লোন বাংলাদেশ এখানে সুদের পরিমাণ মাত্র ৯ পার্সেন্ট নেওয়া হয় যাতে করে উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে। এছাড়া আপনি যদি প্রধানমন্ত্রী ব্যবসার লোন নিতে চান তাহলে আপনার বেশ কিছু যোগ্যতা থাকতে হবে এবং এখানে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কেও আপনাকে জানতে হবে আর এ সম্পর্কে আমরা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করব।
  • যোগ্যতাঃ
১। আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের একজন নাগরিক হতে হবে।

২। এছাড়া আপনি যে কাজের উপর লোন নিবেন সে কাজে আপনাকে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে না হলে আপনি লোন পাবেন না।

৩। এবং আবেদনকারীর বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৩৪ এর মধ্যে হতে হবে।

৪। আপনি যদি অন্য কোথাও লোন করে থাকেন তাহলে আপনাকে প্রধানমন্ত্রীর লোন বাংলাদেশ ঋণ দেবে না আপনাকে প্রথমে সেই লোন পরিশোধ করতে হবে।

৫। এবং আপনার হয়ে একজন সাক্ষী লাগবে যার জমি রয়েছে এবং যার ঋণ পরিশোধ করার ক্ষমতা আছে।
  • আবেদন প্রক্রিয়াঃ
১। আপনি যদি প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ থেকে ঋণ নিতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর লোন বাংলাদেশ এর সাইডে গিয়ে প্রাথমিক আবেদন করতে হবে।

২। এবং এরপর আপনার যেকোনো সম্পত্তির দলিল অথবা জমিদারের সম্পত্তির দলিল জমা দিতে হবে।

৩। এরপর প্রধানমন্ত্রী লোন বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদনটি করবে এবং তারা যদি আপনার আবেদনটি গ্রহণ করে তাহলেই আপনি ঋণ পাবেন।

লেখকের মন্তব্য

যেকোনো ব্যবসার জন্য উদ্যোক্তা লোন কিভাবে পাওয়া যায় এ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে তাই আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আর্টিকেলটিতে অবশ্যই একটি লাইক এবং কমেন্ট করবেন। এবং এ ধরনের আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে যুক্ত থাকবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

rsfahim it নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url